রাষ্ট্রীয় সহায়তায় দল গঠন করলে জনগণ হতাশ হবে: তারেক রহমান

                 রাষ্ট্রীয় সহায়তায় দল গঠন করলে জনগণ হতাশ হবে: তারেক রহমান

 

                    রাষ্ট্রীয় সহায়তায় দল গঠন করলে জনগণ হতাশ হবে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্প্রতি এক বক্তব্যে বলেছেন, রাষ্ট্রীয় সহায়তায় রাজনৈতিক দল গঠন জনগণের প্রতি অবিচার এবং গণতন্ত্রের পরিপন্থী। তিনি উল্লেখ করেন, কোনো দল যদি রাষ্ট্রের অর্থ বা সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে গড়ে ওঠে, তবে তা জনগণের আস্থা হারাবে। জনগণ বিশ্বাস করে, রাজনৈতিক দলগুলোর উত্থান হওয়া উচিত জনগণের সমর্থনের ভিত্তিতে, রাষ্ট্রীয় সম্পদের নয়।

তারেক রহমান আরও বলেন, রাষ্ট্রীয় সহায়তায় গঠিত দলগুলো কখনোই জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি হতে পারে না। এ ধরনের দলগুলো সাধারণত ক্ষমতার লোভে গঠিত হয় এবং জনগণের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে ব্যর্থ হয়। তিনি এ প্রসঙ্গে আরও উল্লেখ করেন যে, রাষ্ট্রীয় অর্থ বা প্রভাব ব্যবহার করে গড়ে ওঠা দলগুলো রাজনৈতিক অঙ্গনে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

জনগণের হতাশা এবং গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জ

তারেক রহমানের মতে, গণতন্ত্রের মূলে রয়েছে জনগণের স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার এবং তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন। কিন্তু রাষ্ট্রীয় প্রভাব ও সহায়তায় দল গঠন করা হলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে যায়। এটি জনগণের মনে হতাশা সৃষ্টি করে এবং তারা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ওপর থেকে আস্থা হারায়।

তিনি বলেন, "যে দল জনগণের পক্ষে কথা বলবে, জনগণের কষ্ট লাঘব করবে এবং তাদের অধিকার আদায়ে কাজ করবে, সেই দলই জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি। কিন্তু যদি কোনো দল রাষ্ট্রীয় সহায়তা নিয়ে তৈরি হয়, তবে সেই দল জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারে না। বরং তারা ক্ষমতাসীনদের স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যস্ত থাকে।"

স্বচ্ছ এবং গণমুখী রাজনীতির প্রয়োজনীয়তা

তারেক রহমান আরও বলেন, বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের জনগণ একটি গণতান্ত্রিক এবং ন্যায়ভিত্তিক পরিবেশ চায়, যেখানে সব দল সমান সুযোগ পাবে এবং জনগণ তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারবে।

তারেক রহমানের মতে, রাষ্ট্রীয় সহায়তায় দল গঠন শুধু গণতান্ত্রিক কাঠামোকে দুর্বল করে না, বরং এটি রাজনীতিতে একটি অস্বচ্ছ ও অসাধু সংস্কৃতির জন্ম দেয়। তিনি বলেন, "আমাদের দেশের রাজনীতিতে যেসব অনৈতিক এবং অসাধু কার্যকলাপ দেখা যায়, তার মূল কারণগুলোর একটি হলো ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছেমতো দল গঠন এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতা।"

ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী রাজনৈতিক ব্যবস্থা

তারেক রহমান জোর দিয়ে বলেন যে, দেশের জনগণ চায় একটি শক্তিশালী এবং স্বাধীন রাজনৈতিক ব্যবস্থা। তিনি বলেন, "আমরা যদি রাষ্ট্রীয় সহায়তা ছাড়াই জনগণের সমর্থনের ভিত্তিতে দল গঠন করতে পারি, তবে সেটি হবে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক দল। এ ধরনের দলই জনগণের সমস্যাগুলো বুঝতে এবং সেগুলোর সমাধান করতে সক্ষম।"

তিনি আরও বলেন, "গণতন্ত্র কেবল একটি নির্বাচন বা ভোট দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি প্রক্রিয়া, যা জনগণের মতামত এবং তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।"

শেষ কথা

তারেক রহমানের এই বক্তব্য বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। রাষ্ট্রীয় সহায়তায় দল গঠন না করে জনগণের সমর্থনের ভিত্তিতে রাজনীতি পরিচালনার আহ্বান জানিয়ে তিনি দেশের গণতন্ত্রের ভিত্তি আরও শক্তিশালী করার কথা বলেন। তার এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার গুরুত্বকে আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post